নিউজ ডেস্ক : চোখের জলে দেশ ছাড়লেন ওরা। ৬৮ বছর যে মাটিতে বসবাস, সেই মাটির টান আর স্বজন-প্রতিবেশীদের বন্ধন ছিন্ন করে দেশ ছাড়লেন বিলুপ্ত ছিটমহলের ১৭টি পরিবারের ৬৩ জন। হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার এক সেতুবন্ধন ছিন্ন করে চলে গেলেন তারা। মায়ার বাঁধন ভাঙতে হলো তাদের। এমন বিদায় সত্যিই বেদনাদায়ক। বিদায় বেলায় কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। পাটগ্রাম-বুড়িমারি সীমান্তে আনন্দ-বেদনার এ ক্ষণে বাংলাদেশের প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছিল নানা আয়োজন। ওপারেও তাদের দেয়া হয় উষ্ণ অভ্যর্থনা। বিলুপ্ত ছিটমহলের অর্ধশতাধিক বাসিন্দার বিদায় উপলক্ষে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসতে থাকেন পাটগ্রাম সীমান্তে। নাড়ির বন্ধন ছেড়ে চলে যাওয়া মানুষগুলোকে বিদায় জানাতে এসে চোখের পানি ফেলেন অনেকে। শেকড়ের মায়া ছাড়াতে যেমন কষ্ট তেমনি কারো কারো মুখে ছিল আনন্দের হাসি। এক ঠিকানা ছেড়ে আরেক ঠিকানায় পাড়ি আনন্দের হলেও বেদনাও কোনো অংশে কম নয়। পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর কুতুবুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ৬৩ ছিটমহলবাসীকে বিদায়ে নানা আয়োজন ছিল। অত্যন্ত সুন্দরভাবে তাদের বিদায় দিয়েছি। তিনি বলেন, আজ প্রথম দফায় হাতীবান্ধার ৬০ জন ও পাটগ্রামের ৩ জন ভারত গেলেন। ৬৭ জন যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে ৬৩ জন যান। তিনি জানান, একজন নতুন বিয়ে করেছেন, আরেকজনের স্বামীর কার্ড হলেও স্ত্রীর হয়নি। তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। এ কারণে ৪ জন আজ ভারতে যেতে পারেননি। পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর কুতুবুল আলম ও হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান জানান, হাতীবান্ধা উপজেলার দু’টি ছিটমহলের মধ্যে ১৭টি পরিবারের ৬৪ জন সদস্য যৌথ হালনাগাদ জনগণনায় ভারতের নাগরিকত্ব চেয়ে ছবিসহ আবেদন করেন। তারা জানান, একই তালিকায় পাটগ্রাম উপজেলার অভ্যন্তরে সদ্য বিলুপ্ত ৫৫টি ছিটমহলের মধ্যে ১১৯ নম্বর বাঁশকাটা ছিটমহলের ২১টি পরিবারের ৯৯ জন, ১১২ নম্বর বাঁশকাটা ছিটমহলের ৩টি পরিবারের ৬ জন, ১১৫ নম্বর বাঁশকাটা ছিটমহলের ৫টি পরিবারের ২৪ জন, ১৪ নম্বর লতামারী ছিটমহলের ১টি পরিবারের ৩ জন, ১৫ নম্বর খরখরিয়া ছিটমহলের ১টি পরিবারের ১ জন সদস্য ভারতীয় নাগরিকত্ব চেয়ে ছবিসহ আবেদন করেন।